দেবী ফুল্লরা মন্দির
ফুল্লরাতলা
পীঠনির্ণয় তন্ত্র অনুযায়ী লাভপুরে সতীর ওষ্ঠ পড়েছে বলে বিশ্বাস। এখানে দেবী ফুল্লরা মহাপীঠ নামে পরিচিত। সুবিশাল প্রাঙ্গনে আটচালা বিশিষ্ঠ বিস্তৃত চাতালের মাঝে মন্দির। কূর্মাকৃতির সিঁদুর- কুঙ্কুম রঞ্জিত প্রস্তর মূর্তি দেবী ফুল্লরা জয়দুর্গা ধ্যানে পূজিত। কথিত আছে অট্টহাস এই শিলামুর্তির প্রথম পূজারী। পরবর্তীকালে তার উত্তর পুরুষ ভবদেব ভট্ট মৈথিলী ব্রাহ্মণদের এনে দেবী পূজার দায়িত্ব দেন। এক সময় এই মন্দির শীর্ষে স্বর্ণ কলস স্থাপিত ছিল বলে সিয়ান প্রশস্তি থেকে জানা যায়। বর্তমান মন্দিরখানি ১৯০২ সালে নির্মিত করেন স্থানীয় জমিদার যাদবলাল বন্দোপাধ্যায়। মূল মন্দিরের পাশেই আছে ছোট্ট মন্দিরে বিরাজ করছেনপীঠ ভৈরব - বিশ্বেশ। সংলগ্ন স্থানেই দেখতে পাবেন পঞ্চমুন্ডির আসন, শিবাভোগ স্থান, সামনে বৃহৎ পুষ্করনী।
দেবী ফুল্লরা মন্দির
ফুল্লরাতলা শিব মন্দির
মেলা ও উৎসবঃ অট্টহাসের পর কাশী থেকে কৃষ্ণানন্দ গিরি স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে এসে জয়দুর্গার ধ্যানে নতুন করে মাতৃপূজা শুরু করেছিলেন। মাঘী পূর্ণিমা তিথিতে তিনি মাতৃ আদেশে এসে দেখা পেয়েছিলেন বলে প্রতিবছর ওই তিথিতে হোম যজ্ঞ, মায়ের বিশেষ পূজা ও দশ দিনব্যাপী মেলা সংঘটিত হয়।
থাকা-খাওয়াঃ মায়ের নিত্য অন্নভোগ হয় ভক্তরা তা গ্রহণ করতে পারেন। এছাড়া হোটেল আছে অনেক। মন্দির কর্তৃপক্ষের উপাসনা ভবনে থাকার সুব্যবস্থা আছে। প্রকৃতির মধ্যে থাকতে চাইলে গুরুকুল নাট্য আশ্রমের নির্জন স্বতন্ত্র পরিবেশে থাকা যেতে পারে। তারাশঙ্কর জন্মস্থান ধাত্রীদেবতার হরিদাস ভবন গেস্ট হাউসও পাওয়া যেতে পারে।
দেবী ফুল্লরা কুন্ড এবং বিগ্রহ
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছারি বাড়ি
কি কি দেখবেনঃ লাভপুর খুব প্রাচীন জনপদ। বাস স্ট্যান্ড থেকে একটা অটো বা টোটো নিয়ে মায়ের মন্দিরে প্রণাম করে কথাসাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মস্থান ও সংগ্রহশালা, ঠাকুরবাড়ি, হাঁসুলীবাঁক দেখে আসা যায়।
কি ভাবে যাবেনঃ বর্ধমান-রামপুরহাটগামী ট্রেনে বোলপুর অথবা আহমদপুরে নেমে লাভপুর আসা যায়। তাছাড়া কলকাতা থেকে লাভপুর এখন সরকারি বাস সার্ভিসও চালু হয়েছে।