শক্তিভূমি
অনেকে মনে করেন বীরাচারী সাধনার ভূমি বলেই না কি এই রুক্ষ লাল কাঁকুড়ে বন্ধুর ভূমির নাম বীরভূম।
এই বীরভূমেই ছড়িয়ে আছে তন্ত্র সাধনা তথা শক্তিসাধনার বিচিত্র সিদ্ধাসন। এই মাটিতেই সিদ্ধপীঠ রূপে আলোকিত হয়ে আছে মহাপীঠ তারাপীঠ। আবার বীরভূমই দেশের একমাত্র জেলা যে মাটি পঞ্চ সতীপীঠে ধন্য।
এই ত্রিভুজাকৃতি বন্ধুর ভূমি বীরভূম তাই শক্তিক্ষেত্র রূপে প্রতিষ্ঠিত।
পৌরাণিক আখ্যান অনুযায়ী প্রজাপতি দক্ষ কঙ্খলে মহাসমারোহে শুরু করেন যজ্ঞ। যজ্ঞে সকল দেবতার আমন্ত্রণ থাকলেও পিতার অমতে শ্মশানচারী শিবকে বিবাহ করার জন্য কন্যা সতী ও জামাতা মহাদেবকে নিমন্ত্রণ জানালেন না।
যজ্ঞ উৎসবের খবর পেয়ে অনাহুত হয়েই সতী এলেন কঙ্খলে- কিন্তু ক্রমাগত পতিনিন্দা সহ্য করতে না পেরে যজ্ঞ অগ্নিতে প্রাণ বিসর্জন দিলেন।
বার্তা পেয়ে দেবাদিদেব মহারুদ্র রূপে ধ্বংস করলেন যজ্ঞ। তারপর প্রাণহীন সতীর দেহ স্কন্ধে শুরু করলেন তান্ডব নৃত্য। সৃষ্টি লয় হতে চলেছে দেখে বিষ্ণু সুদর্শন চক্র দ্বারা সতীর দেহ একান্নটি খন্ডে ছিন্ন করেন। এই একান্নটি দেহাংশ যেখানে যেখানে পতিত হয়, তাই সতীপীঠ নামে পরিচিত। ভারত ছাড়াও পাকিস্তান, নেপাল, তিব্বত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কায় সতীপীঠ অবস্থিত। এই একান্নটি পীঠের পাঁচটি পীঠই অবস্থিত বীরভূম জেলায়। তাই বীরভূম কে পঞ্চপীঠভূমি বলা হয়ে থাকে। আর প্রতিটি পীঠে স্বয়ং মহাদেব বিরাজ করেন পীঠভৈরব রূপে।
তারাপীঠ মন্দির
শক্তিভূমি মন্দিরগুলি
তারাপীঠ
নলাটেশ্বরী
নন্দিকেশ্বরী
মহিষমর্দিনী
কঙ্কালীতলা
ফুল্লরাতলা
বীরভূম তন্ত্রসাধনার পীঠভূমি। কেউ কেউ মনে করেন কামরূপ কামাখ্যার পর সারা ভারতের জাগ্রত তন্ত্রপীঠ এই বীরভূম। তাই বীরভূমের প্রায় সব ব্লকেই সন্ধান করলে দেখা যাবে বহু প্রাচীনকালের তন্ত্রপীঠ বা শাক্তপীঠ বর্তমান।
আছে বোলপুর সন্নিকটস্থ বড়াকালী, কীর্ণাহারের ভদ্রকালীতলা, কীর্ণাহার থেকে লাভপুর আসার পথে পড়বে কালিকানন্দ অবধূত পূজিতা দেবী মুণ্ডমালী। মহেশপুর, দোনাইপুর, নিরিসা, বাকুল, বাগডোলা, দ্বারবাসিনী, পাইকর খ্যাপাকালী মন্দির। রুদ্রনগরের কালী, কনকপুরের অপরাজিতা মন্দির, শক্তিপুরের চন্ডী মন্দির বীরভূমের অন্যতম শক্তিসাধন স্থল।
অন্যান্য শাক্তক্ষেত্র
ফুল্লরাতলা